আসসালামু আলাইকুম স্যার। আমার নাম আসাদুজ্জামান।পিতা :মো: নুরুল হক। আমরা টাংগাইল জেলার কালিহাতী থানার নাগবাড়ী গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা।বর্তমানে চট্টগ্রামে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছি। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি কর্নফুলী পেপার মিলে যোগদান করে ৮৬-৮৭ তে পার্বত্য চট্টগ্রামে আসেন।কিন্তু সে বছরেই সেনাবাহিনী ও শান্তি বাহিনীর সাথে প্রচন্ড গোলাগুলির সময় তার মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট এবং যাবতীয় ডকুমেন্ট ফেলে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেছিল।পরবর্তীতে কোনো সররকারই মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কোনো পরিকল্পনা না নিলে তিনি সার্টিফিকেটের ততটা গুরুত্ব দেন নি।বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশকে বাচাতে যুদ্ধ করতে যাওয়াটাকেই তিনি বড় পাওয়া ভেবেছেন।এর মাঝেই বি এন পি সরকারের আমলে ২০০৪ সালে তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হয় এবং সেখানে আমার বাবার নাম বাদ দিয়ে গ্রামেরই এক রাজাকার আফরোজ মাষ্টারের নাম তালিকাবদ্ধ করা হয়। আমার বাবা ২০০৯ সালে রিটায়র্ড করেন। সংসার জীবনের গ্লানিতায় তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।তাহার তিন সন্তান আজও নিজের পায়ে দাড়াতে পারে নি। এরপরই তিনি শুনতে পান নেত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু ভাতার চালু করছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের চাকরীর বয়স ও বৃদ্ধি করছেন।এমন পদক্ষেপে আমার বাবাও তথা আমরাও আশার আলো দেখতে পাচ্ছিলাম।তিনি গ্রামে গিয়ে তার যুদ্ধকালীন সহযোদ্ধা,থানা,জেলা কমান্ডারের সাথে কথা বলেন এবং যাবতীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করেন। সকল মুক্তিযোদ্ধারা প্রয়োজনে উপিস্থিত থেকে স্বাক্ষ্য দেয়ারও আশ্বাস দেয়। পরবর্তীতে তিনি ২০১১ সালে মন্ত্রনালয়ে তার যাবতীয় কাগজাদি জমা দেন এবং জমা দেয়ার প্রাপ্ত রশিদও নেন। কিন্তু কোনো অগ্রসর না হওয়ায় উনি আবার মন্ত্রনালয়ে যোগাযোগ শুরু করেন। উনার কাগজ পত্র দেখে তৎকালীন প্রতিমন্ত্রীও সিল ও স্বাক্ষর করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেন এবং সচিব সাহেব যাচাই বাছাই সভায় উত্থাপনের লিখিত সুপারিশ করেন। আর এ সকল প্রমাণাদি সম্বলিত কাগজাদি রয়েছে। দুর্ভাগ্য বাবার সেই কাগজ আর যথাযথ কতৃপক্ষের কাছে পৌছায়নি। এতে আমার বাবা নিরাশ হয়ে আর চেষ্টাই করেন নি। ২০১৪ সালে যখন আবার অনলাইনে মুক্তিযোদ্ধাদের ফরম পুরন চলছিলো দুর্ভাগ্যভাবে বাবা প্রচন্ড অসুস্থতার কারনে ফরম পুরনের সুযোগ হারিয়েছিলেন এবং দুর্ভাগ্য যে সন্তান হয়ে আমরাও সেই খবরটি রাখতে পারি নি। ২০১৭ সালে যখন আবার যাচাই বাছাইয়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে কিন্তু দুর্ভাগ্যভাবে তা শুধু ২০১৪ সালের অনলাইনে যারা পুরন করেছিলো শুধুমাত্র তাদের জন্যই। মাননীয় মন্ত্রী আমার বাবার সকল কাগজপত্র থাকা সত্বেও মুক্তিযোদ্ধা মর্যাদা হতে সুযোগ হারাচ্ছে।আপনার কাছে বিনীত নিবেদন, আমার বাবার কাগজপত্র দেখে যদি সত্যি তিনি মুক্তিযোদ্ধা হয় তাহলে আপনি যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে ন্যায় বিচার করবেন।অন্যথায় যে কোনো শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নিতে পারবেন