প্রথমে আমার সালাম নিবেন। দুই দুইবারের নির্বাচিত সাংসদ হিসেবে আপনি আপনার নির্বাচনী এলাকা জন্নাথপুর-দঃ সুনামগঞ্জে প্রভূত উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন এবং করতেছেন, এজন্য নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসার দাবীদার।
কিন্তু, অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি আমাদের জন্নাথপুর-দঃ সুনামগঞ্জ, সারা বাংলাদেশের মধ্যে শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে পরা জনপদগুলোর একটি। আমাদের এলাকার ভৌগলিক অবস্তান এক্ষেত্রে অনেকাংশেই দায়ী।
প্রাথমিক শিক্ষায় প্রধান সমস্যাগুলো হচ্ছে পর্যাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভাব, বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের অপ্রতুলতা, বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আর্থিক বৈষম্য, বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সুযোগ–সুবিধার অভাব, গ্রাম–শহরের বৈষম্য, বেতন–ফি বাবদ ব্যয় নির্বাহ করতে না পেরে ব্যাপক অংশের ঝরে পড়া, বিদ্যালয়ে শিক্ষার আনন্দদায়ক পরিবেশের অভাব, পঠন–পাঠনে নোটবই নির্ভরতা, ইত্যাদি।সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের দুর্বলতা, সিলেবাস ও পঠন পাঠন পদ্ধতির কারণে গণিতে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে থাকছে। গণিত কারিকুলাম সেকেলে। শিক্ষার্থীরা অনেক সময় গণিত মুখস্থ করে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে গণিত শিক্ষকের ব্যাপক সঙ্কট রয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষার মতোই বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে মেধাবী ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এক্ষেত্রেও শিক্ষকদের বেতন–ভাতা ও স্বীকৃতির অভাব মেধাবীদের এই পেশায় টানছে না। মাধ্যমিক স্তরে বিশেষ করে ইংরেজী ও গণিত শিক্ষকের অপ্রতুলতাই শিক্ষার্থীদের বেশি করে ভোগাচ্ছে।
শিক্ষার সাথে মানুষের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বোধের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। শিক্ষার মধ্য দিয়ে মানুষ নিজেকে আবিস্কার করতে শেখে। তার শ্রেণি চেতনার বিকাশ সাধন হয়। ফলে সে তার চারপাশের জগতকেও সচেতনভাবে পরিবর্তন করতে চায়। সে প্রভাবিত করে বাকিদের। যেটি উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্ম দেয়।
আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি শিক্ষার এসব সংকটের বিরুদ্ধে এখনই তীব্র আন্দোলন শুরু করা দরকার। আর না হয় আমরা জগন্নাথপুর-দঃ সুনামগঞ্জ এলাকার মানুষ কখনোই স্বনির্ভর, আত্মমর্যাদাশীল নাগরিক হিসেবে মাথা উঁচু করে চলতে পারবো না।
উক্ত বিষয়ে আপনার মূল্যবান মতামত আশা করছি। পাশাপাশি জগন্নাথপুর-দঃ সুনামগঞ্জ এলাকার গণশিক্ষা হার বৃদ্ধিতে আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।