Nurul Islam Nahid - নুরুল ইসলাম নাহিদ
Minister of Education
Sylhet-6 , Sylhet
Bangladesh Awami League
View Question 3322 views
Subject : কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অপরিকল্পিত রেজাল্ট ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি
Written By : Minhazur Rahman
মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়
আমার সালাম নিবেন । আপনি নিশ্চয় জানেন বাংলাদেশে প্রায় ৪৯টি সরকারি ও ২০০ এরও বেশি বেসরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট-এ চার বছর (৮ সেমিস্টার) মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এর অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। এই বোর্ড এর মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী তাদের ডিপ্লোমা কোর্স শেষ করে এবং নতুন লক্ষাধিক ভর্তি হয়।
এই বোর্ডে প্রথম তিন সেমিস্টার এর পরীক্ষার উত্তরপত্র কলেজ কর্তৃপক্ষ দেখে এবং বাকি পাঁচ সেমিস্টারের উত্তরপত্র বোর্ড কর্তৃপক্ষ মূল্যায়ন করে। কলেজ ভিত্তিক উত্তরপত্র মূল্যায়ন কালে দেখা যায় ফল প্রকাশের পর এক কপি বিষয় ভিত্তিক মার্কশীট শিক্ষার্থীদের দেয়া হয়। যেখানে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নাম্বারের বিবরণী থাকে। কিন্ত বোর্ডের রেজাল্ট এর ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয়না বা অনুসরণ করা হয়না। বোর্ড বাকি পাঁচ সেমিস্টারের রেজাল্ট প্রকাশ করে থাকে।
গতকাল রাত ১০:১০ মিনিটের সময় দেখা যায় কারিগরি বোর্ড আকস্মিক তাদের ২০১৬ সালের জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদের পর্ব সমাপনি পরিক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ করেছে। ফল প্রকাশ এর ক্ষেত্রে পূর্ব কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়না। যখন মন চায় তখন তারা ফল প্রকাশ করে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের, সেটা হোক রাত কিংবা দিন। যার প্রমাণ পাওয়া গেছে পূর্বে প্রকাশিত কিছু ফল এর ক্ষেত্রে।
বোর্ড এর রেজাল্ট এর ক্ষেত্রে শুধু একটা পিডিএফ ফাইলে সবার সিজিপিএ দিয়ে দেয়া হয় যাতে তার রোল নম্বর ও প্রাপ্ত সিজিপিএ (CGPA) উল্লেখ থাকে। কিন্ত একজন শিক্ষার্থী কোন বিষয়ে কত নম্বর পেল তা জানার কোন উপায় থাকে না। বোর্ড থেকে মার্কশীট আসে প্রায় ১-২ বছর পরে। আর এই মার্কশীট না পাওয়াতে একজন শিক্ষার্থী তার পূর্ণ রেজাল্ট পায়না। এই ক্ষেত্রে তাকে বোর্ডে ফলাফল পুনর্মল্যায়ন এর আবেদন করতে গিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়। এই বিষয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ইঞ্জিনিয়ার সুশীল কুমার পাল এর নাম্বার 9113283 তে শিক্ষার্থী পরিচয়ে যোগাযোগ করলে তিনি জানান ‘তুমি যদি ফেল করে থাক তবে তুমি যেই বিষয়ে ফেল করছ ওইবিষয়ে চ্যালেঞ্জ কর’ যখন আমি বললাম আমি আসলে ফেল করি নাই, কিন্ত আমার গ্রেড একটু কম আসছে এখন কোন সাবজেক্টের ফলে আমার গ্রেড কম আসছে তা জানার জন্য মার্কশীট টা দেখতে চাই। ওনি বলেন, ‘এইক্ষেত্রে তোমাকে সব বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করতে হবে, মার্কশীট এখন পাবেনা।’ ওনার কথা শুনে মনে হল বোর্ড মনে হয় টাকা কামাতে বসছে। কারণ এটা তো কোন সামাধান নয়। একজন শিক্ষার্থী যদি সব বিষয়ে পুনঃনিরীক্ষণ এর আবেদন করে সেক্ষেত্রে কিন্ত তাকে ২১০০-৩০০০ টাকা গুণতে হবে, কিন্ত তার যদি এক বিষয়ে সমস্যা হয় তবে সে কেন অতিরিক্ত টাকা দিবে? এটা ভাবেই গ্রহণযোগ্য না। যেই পদ্ধতিতে তারা (বোর্ড) রেজাল্ট প্রকাশ করে এবং খাতা পুনঃনিরীক্ষন করে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে পলিটেকনিক এর শিক্ষার্থীরা মনে করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক এর মেকানিকাল ডিপার্টমেন্ট এর ছাত্র রাজু বলেন, ‘আসলে এই বোর্ডের রেজাল্ট প্রকাশের ক্ষেত্রে অনেক দুর্বলতা আছে। ত্রুটিও থাকতে পারে। তাই হয়তো তারা পূর্ণ রেজাল্ট প্রকাশ করতে চায়না।’
কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের আরেক শিক্ষার্থী তরুন মজুমদার বলেন, “ওনারা চাইলেই সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এর মত রেজাল্ট সার্ভার তৈরি করতে পারেন যেখানে শিক্ষার্থীরা চাইলে তাদের পূর্ণ রেজাল্ট দেখতে পাবে। কিন্ত বোর্ড মনে হয় আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সাথে এখনো সম্পৃক্ত হতে পারে নাই।”
বোর্ড নিজের খামখেয়ালি মতো চলছে বলেও অনেকে মনে করে। যা ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত। তাই বোর্ডকে এখন থেকে শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করা উচিত এবং ফলাফল পুনঃমূল্যায়নের সমস্যাটি দূর করা উচিত। তাহলে হয়ত কারিগরি শিক্ষাকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য শিক্ষা হিসেবে গড়ে তোলা যাবে।
এই বিষয়ে আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি ।
এই লেখাটি bdnews24.com এর ব্লগে ও প্রকাশ করেছিলাম। ব্লগ লিঙ্কঃ http://blog.bdnews24.com/minhazdipu/211295